চিতোষী ডিগ্রি কলেজে অধ্যক্ষকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত ১০

চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার ঐতিহ্যবাহী চিতোষী ডিগ্রি কলেজে অধ্যক্ষ মো. আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়ার পুনরায় যোগদানকে কেন্দ্র করে কলেজ ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শনিবার (২৪ মে) দুপুরে কলেজ প্রাঙ্গণে আয়োজিত মতবিনিময় সভাকে ঘিরে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। হামলার শিকার হয়েছেন কলেজের দুই শিক্ষকও।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অধ্যক্ষ মো. আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া পূর্বে হাজীগঞ্জ উপজেলার নাসিরকোট কলেজে এমপিওভুক্ত অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০২২ সালের ১৭ ডিসেম্বর তিনি চিতোষী ডিগ্রি কলেজে যোগদান করলেও রাজনৈতিক বিরোধ ও প্রশাসনিক জটিলতায় তার এমপিও কার্যকর হয়নি। বিষয়টি আদালতে গড়ালে দীর্ঘদিনের আইনি প্রক্রিয়া শেষে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট তার এমপিও পুনর্বহালের নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউসি) এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনক্রমে ২০২৫ সালের ২৪ মে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে পূর্ণ অধ্যক্ষ হিসেবে কলেজে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

অধ্যক্ষের যোগদান উপলক্ষে কলেজ প্রাঙ্গণে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সভার একপর্যায়ে কয়েকজন যুবক ছবি তুলতে গেলে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে কথাকাটাকাটি, পরে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। মুহূর্তেই তা ছড়িয়ে পড়ে সংঘর্ষে।

হামলার শিকার কলেজের শিক্ষক আবু সাঈদ ও কামরুন নাহার লিপি ছাড়াও বাইরে আরও অন্তত আটজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
সংঘর্ষের খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছান শাহরাস্তি উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিরুপম মজুমদার, থানা পুলিশ এবং হাজীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের সদস্যরা। তাদের যৌথ প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া বলেন, “আমি দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আদেশের মাধ্যমে দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। আমার একমাত্র লক্ষ্য একটি সুশৃঙ্খল, শান্তিপূর্ণ ও মানসম্মত শিক্ষাপরিবেশ গড়ে তোলা।”
এ সময় কলেজে উপস্থিত ছিলেন শাহরাস্তি উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. মোস্তফা কামাল, বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইকবাল হোসেন এবং বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন কলেজের শিক্ষক ও স্থানীয় সচেতন মহল। প্রশাসনও পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে অতিরিক্ত নজরদারির আশ্বাস দিয়েছে।